পটুয়াখালী প্রতিনিধি ::দেশব্যাপী সরকারের উন্নয়নে ভূমি অধিগ্রহণের সম্পর্ক নিবিড় হলেও ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের শেষ নেই পটুয়াখালী ভূমি অধিগ্রহণ শাখায়।
অফিসের ছোট-বড় সবার সমন্বয়ে তৈরি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য। আর এই সিন্ডিকেটের মুলহোতা ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার আসাদুল রহমান আসাদ।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার আসাদুল রহমান আসাদই সব, ভুমি অধিগ্রহণের টাকা পেতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১০/১৫% ঘুষ দিতে হয় সার্ভেয়ার আসাদ সিন্ডিকেটকে। ঘুষ না দিলে ক্ষতিগ্রস্তদের ফাইল দিনের পর দিন আটকে রাখা হয়। প্রচলিত আছে সার্ভেয়ার আসাদ সিন্ডিকেটকে ঘুষ দিলে জমির জাল দলিলেও অধিগ্রহণের টাকা পাওয়া যায়।
কলাপাড়া উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পাঁচকোরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন মৃধা সার্ভেয়ার আসাদের নামে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি।
সার্ভেয়ার আসাদের যত দুনীতি, পায়রাকুঞ্জে নির্মাণাধীন ব্রিজের দুই পাড়ে অধিগ্রহণকৃত জমির ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র বানিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মানববন্ধন করেন।
আসাদের বাবা/শশুর এর নামে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে ভূমি অধিগ্রহণের ৮৯ লক্ষ টাকার চেক আত্মসাৎ এর অভিযোগ রয়েছে।
বাউফলের দাস পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল সাত্তার মিয়ার ছেলে আবদুল সালাম মিয়ার এল এ কেস নাম্বার ১৬/২০১৭-১৮, খতিয়ান নং ৩৭৮,৪০৩ ও ৪১৬ এর প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে আসাদ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
সার্ভেয়ার আসাদুর রহমান নিজের স্ত্রীর নামে জাল কাগজপত্র তৈরি করে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা স্ত্রীর নামে উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, সার্ভেয়ার আসাদুর রহমানের পদায়ন খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হলেও তিনি ১১ বছর ধরে সংযুক্তিতে পটুয়াখালীতে কর্মরত আছেন। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় ২০১৫ সালে যোগদান করেন। যোগদানের পর একটানা পাঁচ বছর ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কাজ করেন। ২০২০ সালে গলাচিপা উপজেলা ভূমি অফিসে বদলি করা হলে ৬ মাস না যেতে তদবির করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আবার পটুয়াখালী ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় চলে আসে। দুনীতির অভিযোগে কিছুদিন পরে আবার মির্জাগঞ্জ বদলি করা হলে সেখানে ৬ মাস না যেতে আবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় বদলি হয়ে চলে আসে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত আছেন। কি মধু ভূমি অধিগ্রহণ শাখায়, ঘুরে ফিরে এক জায়গায় বারবার?
ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিমালিকদের অভিযোগ, ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় টাকা ছাড়া কোনো ফাইল নড়ে না। অধিগ্রহণের অর্থ পেতে ফাইল জমা দেওয়া থেকে শুরু করে চেক পাওয়া পর্যন্ত চুক্তির মাধ্যমে চলে টাকার খেলা। টাকা না পেলে সার্ভেয়ার আসাদ সিন্ডিকেট নানা কারণ দাঁড় করিয়ে আটকে রাখেন ক্ষতিপূরণের চেক।
ভুক্তভোগীদের দাবি অবিলম্বে সার্ভেয়ার আসাদকে বদলি করে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সিন্ডিকেট ভেঙে সৎ দায়িত্বশীল লোক নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান করেন এবং এই দুর্নীতিবাজ সার্ভার আসাদের সিন্ডিকেটের হাত থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার মুক্তির দাবি জানায়।
সার্ভেয়ার আসাদুর রহমান আসাদের দুনীতি ও অনিয়মের বক্তব্যের জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেন নাই, ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।
জেলা প্রশাসকে মুঠোফোনে সার্ভেয়ার আসাদুর রহমান আসাদের অনিয়ম ও দুনীতির বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দেন নাই।
আসাদ সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত আছেন সার্ভেয়ার ফারুক, সার্ভেয়ার আনোয়ারুল, সার্ভেয়ার মনিরুজ্জামান, কানুনগো শহিদুল ইসলাম সহ বেশ কিছু দালাল চক্র,, ,,,,,,, চোখ রাখুন দ্বিতীয় পর্ব।