মনির হোসেন। বরিশালের সদর উপজেলার চাদপুরা ইউনিয়নের দুর্গাপুর আবাসিক এলাকায় স্কুল,মাদ্রাসা সংলগ্ন গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ ইট ভাটা।অধিকাংশ ইটভাটা গুলোই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বিহীন।ইটভাটা গুলো গড়ে উঠেছে আবাসিক এলাকার বাড়ি ঘরের মধ্যে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই সকল ইটভাটা।
কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এ এলাকায় যত্রতত্র ইটভাটা নির্মাণ করে পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ। এতে করে একদিকে পরিবেশ চরমভাবে হুমকির মুখে পড়ছে, অন্যদিকে ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার প্রভাব পড়ছে ফসলি জমিতে।
প্রতিবছরের তুলনায় এ বছর কাঠ খড়ি দিয়ে এইসব ভাটার ইট পোড়ানো হচ্ছে। আর ইট পোড়ানোর জন্য ইট ভাটার মালিকরা পূর্ববর্তী বছর গুলির ন্যায় এবারেও জ্বালানী হিসেবে কাঠ খড়ি দিয়ে পোড়াচ্ছে। এ জন্য ইটভাটার মালিকগন গত কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার মন কাঠখড়ি সংগ্রহ করে তাদের ইট ভাটার নির্দিষ্ট স্থানে মজুদ করেছে। এখনও কাঠ খড়ি সংগ্রহ অব্যহত রয়েছে। আইনের তোয়াক্কা না করে কাঠখড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে পোড়ানো হচ্ছে ইট। আর এ ভাবেই চলতে থাকবে ইট পোড়ানোর পুরো মৌসুম। ব্যাঙের ছাতার মতো ইটভাটা গড়ে উঠলেও স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকায়।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কি না এ নিয়ে সচেতন মহল সন্দিহান। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও, তা মানা হচ্ছে না। ইট পোড়ানো মৌসুমের শুরু থেকেই আবার চালু করা হয়েছে অবৈধ ইটভাটাগুলো। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতেও দেখা যাচ্ছে না প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে।
উপজেলার চাদপুরা ইউনিয়নের দুর্গাপুর এলাকায় সিগমা ব্রিকস প্রো: নুরু মিয়া একটি ইট ভাটার কিলন ভাড়া নিয়ে অবৈধভাবে ইট পোড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ইট ভাটার মালিক কিরতন খোলা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ২টি ইটভাটা তৈরি করে রমরমা ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নদীর চর থেকে মাটি কেটে ইট তৈরি করছে। ফসলের জমি ও বাড়ি ও স্কুল সংরগ্ন গড়ে উঠেছে অবৈধ ইট ভাটা । সরকারের নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি আইন অমান্য করে ইট ভাটা গুলোতে কয়লার বদলে কাঠের স্তুপ রেখে পোড়ানো হয় কাঠ। যার ফলে বনজ সম্পদ উজাড় হচ্ছে। এসব এলাকার পরিবেশ দূষিত হওয়ায় রবি শস্য,আমের মুকুলসহ সব ধরনের ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ তে বলা হয়েছে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা অর্থাৎ জিগজ্যাগ ক্লিন, হাইব্রিড হফম্যান ক্লিন, ভার্টিক্যাল শফট ক্লিন, টানেল ক্লিন বা অনুরোপ উন্নততর কোনো প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া আবাসিক, জনবসতি, সংরক্ষিত এলাকার বনভূমি ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা করা যাবে না। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বা লাইসেন্স না নিয়ে ইটভাটা চালু করা যাবে না। আর এ আইন অমান্য করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক এইচ এম রাশেদ বলেন,আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে,অভিযুক্ত ভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই অবৈধ ইটভাটা চিহ্নিত করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হবে।